‘ডলার সংকটে বিকল্প বিনিময় ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে’

 

‘ডলার সংকটে বিকল্প বিনিময় ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে’

‘কভিড-১৯ ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বের মতো বাংলাদেশের ডলারের দাম ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। ডলারের সংকট তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দামসহ আমদানি খরচ বেড়েছে। এই সংকট মোকাবেলায় ভারত, চীনসহ কয়েকটি দেশ সোয়াপ ব্যবস্থা বা নিজস্ব মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।


বাংলাদেশেও এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।’

শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এডুকেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (ইআরডিএফবি) আয়োজিত ‘ইয়ান-টাকায় ট্রেড ও বাংলাদেশে ডলার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব বিষয় উপস্থাপন করেন।

আলোচকরা জানান, অব্যাহত ডলার সংকটের মুখে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে চীনের মুদ্রা ইয়ানে অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চীন এখন পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ।

তাদের সঙ্গে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে। তাই চীনের ইউয়ান ও দেশের টাকায় বাণিজ্য পরিচালনার উদ্যোগ ডলার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাবে এবং দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অধ্যাপক ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুইফট বন্ধ করে দিয়েছিল। এতে বাণিজ্যিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও ক্ষতির মুখে পড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত ও চীনের মতো দেশগুলো ডলার ছাড়া অন্য মুদ্রায় বিনিময়ের কথা ভাবতে শুরু করে। ভবিষ্যতে এমন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর প্রস্তুতি হিসেবে ইউয়ান-টাকা ট্রেডের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঠিক কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন।’

মূল আলোচক বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত ৩০ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ। বর্তমান সরকার অবকাঠামো উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখেছে তা স্বাধীনতার পর ইতিহাসে প্রথম।

এই ব্যয় বাংলাদেশের লেনদেন হিসেবের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। পাশাপাশি তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান তৈরিতে ভূমিকা রেখে চলছে। ইউয়ান-টাকায় ট্রেড কিছুটা ব্যয়বহুল হলেও সঠিক কর্মপরিকল্পনা দেশের ভবিষ্যতে সুফল বয়ে আনতে পারে।’

সেমিনার এবং ইআরডিএফবির সভাপতি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে দেশের তরুণ সমাজকে শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করে স্মার্ট নাগরিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। প্রতিটি নাগরিকের জন্য স্মার্ট কর্মসংস্থান তৈরি করার মাধ্যমে স্মার্ট ক্যারিয়ার গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরি করা। এ ক্ষেত্রে ইউয়ান-টাকা ট্রেড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, যা ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গতিশীলতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে।’

সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন ইআরডিএফবির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, বিশেষ অতিথি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন। উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইআরডিএফবির সিনিয়র সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল জব্বার খান।

নবীনতর পূর্বতন
Magspot Blogger Template
Magspot Blogger Template
Magspot Blogger Template

نموذج الاتصال